কী কারণে মুসিলম লীগকে পরাজয় বরণ করতে হয়?
What are the reasons for the Muslim League in 1954 To lose the election?
Answer: INTRODUCTION: Seven long years after the founding of Pakistan in 1947, the East Bengal Provincial Assembly elections were finally held in March 1954. This was the first provincial election of East Bengal in Pakistan. The election was held on the basis of universal adult vote. Several parties formed a united front to contest the elections against the ruling dictatorial Muslim League government.
Reasons for the defeat of the Muslim League in the 1954 elections: In the 1954 elections, the Muslim League of East Bengal suffered a crushing defeat. The reasons for the defeat of the Muslim League in the elections are discussed below:
1. Selfish attitude of the Muslim League: The Muslim League showed utter disregard for the interests of the people of East Bengal. The people of Bengal were outraged at this party for opposing the demand for making Bengali one of the state languages. The Muslim League, despite realizing the protests of the Bengalis, remained loyal to the vested interests of West Pakistan. As a result, the defeat of the Muslim League became inevitable.
2. Ideological quarrels and internal conflicts of the Muslim League: Due to the ideological quarrels and internal conflicts of the Muslim League, East Bengal became quite weak in terms of organization. The Lahore resolution of 1940 called for granting autonomy and sovereignty to different regions. But in 1948, the reactionary leaders of the Muslim League amended the Lahore resolution and abolished the provision of regional autonomy and sovereignty. This led to ideological conflicts with these leaders like Abul Hashem, Shaheed Suhrawardy, Maulana Bhasani and others. Suhrawardy, Bhasani and others had to leave the Muslim League due to the conspiracy of the orthodox leaders of the Muslim League.
3. Disregard for Autonomy: The people of East Bengal strongly support their demand for regional autonomy. But the Muslim League did not respond appropriately to this demand. They disregarded the demand for autonomy in various ways which deeply moved the people of East Bengal.
4. Discriminatory Attitudes: East Bengal with the patronage and favor of the Muslim League-led central government. There was widespread inequality in West Pakistan. East Bengal became a colony of West Pakistan.
5. Administrative Failure: Even before the provincial elections, the political, economic and social decline of East Bengal began to occur. The food crisis and the flood problem are in serious form. The Muslim League government failed to prevent this crisis.
6. Undemocratic attitude: The Muslim League government did not allow the East Bengal provincial elections to be held in 1951, but extended the term of the provincial legislature for three years. As a result of this anti-democratic act, the popularity of the Muslim League was tarnished.
7. The tragic events of February 21: Despite the fact that Bengali is the spoken language of 56% of the people of Pakistan, the central leaders of the Muslim League conspired to make Urdu the state language. In protest of their conspiracy, the students of Dhaka University took out a procession with the slogan 'I want Bangla as the state language'. Police shot their peaceful procession at the command of the Muslim League Chief Minister. Salam, Barkat, Jabbar, Rafiq and other promising young people fell in the lap of death. The people of the country became angry with the Muslim League in protest of the killing of this student.
8. Torture measures: Muslim League in East Bengal He called various mass movements as traitors. A party | The government considered defeat inevitable in the elections and resorted to torturing the opposition leaders and activists. This created more protests in the minds of the people.
9. Failure to draft constitution: Muslim League-led Constituent Assembly fails to draft new constitution for Pakistan. As a result, the popularity of the team is greatly reduced. As a result, the path of victory of the Muslim League became much easier.
Conclusion: After the above discussion, it can be said that after the creation of Pakistan, due to undemocratic attitude of the Muslim League, attack on the Leader of the Opposition and the Bengali language, the Muslim League lost the 1954 elections and above all the United Front won. Bengalis dream of their economic, political, social and linguistic liberation within the 21 points of the United Front. Therefore, in the 1954 elections, the Bengalis won the United Front with their unwavering support.
কী কী কারণে মুসিলম লীগকে ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে পরাজয় বরণ করতে হয়?
উত্তর ভূমিকা : ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ সাত বছর পর অবশেষে ১৯৫৪ সালের মার্চ মাসে পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক আইনসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এটাই ছিল পাকিস্তানে পূর্ব বাংলার প্রথম প্রাদেশিক নির্বাচন। সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্ক ভোটের ভিত্তিতে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন স্বৈরাচারী মুসলিম লীগ সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে কয়েকটি দল যুক্তফ্রন্ট গঠন করে।
১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয়ের কারণ : ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে পূর্ব বাংলার মুসলিম লীগের চরম পরাজয় ঘটে। নির্বাচনে মুসলিম লীগের পরাজয়ের কারণগুলো নিচে আলোচনা করা হলো :
১. মুসলিম লীগের স্বার্থান্বেষী মনোভাব : মুসলিম লীগ পূর্ব বাংলার জনগণের স্বার্থের প্রতি চরম উপেক্ষা দেখিয়েছিল। এ দল বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবির বিরোধিতা করায় এর প্রতি বাংলার জনগণ বিক্ষুব্ধ ছিল। মুসলিম লীগ বাঙালিদের বিক্ষোভ উপলব্ধি করেও পশ্চিম পাকিস্তানের কায়েমি স্বার্থবাদীদের প্রতি অনুগত থাকে। এর ফলে মুসলিম লীগের পরাজয় অনিবার্য হয়ে উঠে।
২. মুসলিম লীগের আদর্শগত কোন্দল ও অন্তর্দ্বন্দ্ব : মুসলিম লীগ আদর্শগত কোন্দল ও অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে পূর্ব বাংলায় সাংগঠনিক দিক দিয়ে বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবে বিভিন্ন অঞ্চলকে স্বায়ত্তশাসন ও সার্বভৌমত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগের প্রতিক্রিয়াশীল নেতারা লাহোর প্রস্তাব সংশোধন করে আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসন ও সার্বভৌমত্বের সংস্থান বিলোপ করেন। এতে এসব নেতার সাথে আবুল হাশেম, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী প্রমুখের আদর্শগত বিরোধ দেখা দেয়। মুসলিম লীগের গোঁড়া নেতাদের চক্রান্তে সোহরাওয়ার্দী, ভাসানী প্রমুখকে মুসলিম লীগ ত্যাগ করতে হয়।
৩. স্বায়ত্তশাসনের প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শন : পূর্ব বাংলার জনগণ নিজেদের আঞ্চলিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। কিন্তু মুসলিম লীগ এ দাবির প্রতি উপযুক্তভাবে সাড়া দেয়নি। তারা বিভিন্নভাবে স্বায়ত্তশাসনের দাবির প্রতি উপেক্ষা প্রদর্শন করে যা পূর্ব বাংলার জনগণকে গভীরভাবে নাড়া দেয়।
৪. বৈষম্যমূলক মনোভাব : মুসলিম লীগ নেতৃত্বে পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ও আনুকূল্যে পূর্ব বাংলা ও | পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে ব্যাপক বৈষম্যের সৃষ্টি হয়। পূর্ব বাংলা পশ্চিম পাকিস্তানের উপনিবেশে পরিণত হয়।
৫. প্রশাসনিক ব্যর্থতা : প্রাদেশিক নির্বাচনের আগে থেকেই পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবক্ষয় ঘটতে থাকে। খাদ্য সংকট ও বন্যা সমস্যা মারাত্মক আকারে দেখা দেয়। এ সংকটময় অবস্থা রোধে মুসলিম লীগ সরকার ব্যর্থ হয়।
৬. অগণতান্ত্রিক মনোভাব : মুসলিম লীগ সরকার ১৯৫১ সালে অনুষ্ঠেয় পূর্ব বাংলার প্রাদেশিক নির্বাচন হতে দেয়নি, বরং প্রাদেশিক আইনসভার মেয়াদ ৩ বছরের জন্য বাড়িয়ে নিয়েছিল। এ গণতন্ত্রবিরোধী কাজের ফলে মুসলিম লীগের জনপ্রিয়তা ক্ষুণ্ন হয়।
৭. ২১ ফেব্রুয়ারির বিয়োগান্তক ঘটনা : পাকিস্তানের শতকরা ৫৬ জন মানুষের মুখের ভাষা বাংলা হওয়া সত্ত্বেও মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উর্দুকে রাষ্ট্র ভাষা করার চক্রান্ত করে। তাদের এ চক্রান্তের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই' এ শ্লোগান দিয়ে মিছিল বের করে। মুসলিম লীগ দলীয় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ তাদের শান্তিপূর্ণ মিছিলে গুলি করে। এতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সালাম, বরকত, জব্বার, রফিক প্রমুখ সম্ভাবনাময় তরুণ। এ ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে দেশের জনসাধারণ মুসলিম লীগের প্রতি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে।
৮. নির্যাতনমূলক পদক্ষেপ : মুসলিম লীগ পূর্ব বাংলায় | বিভিন্ন গণআন্দোলনকে দেশদ্রোহী বলে অভিহিত করে। এ দলীয় সরকার নির্বাচনে পরাজয় অনিবার্য ভেবে বিরোধী নেতা ও কর্মীদের উপর নির্যাতন করার পথ অবলম্বন করে। এতে জনগণের মনে আরো বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
৯. সংবিধান প্রণয়নে ব্যর্থতা : মুসলিম লীগের নেতৃত্বাধীন গণপরিষদ পাকিস্তানের নতুন সংবিধান রচনায় ব্যর্থ হয়। ফলে দলের জনপ্রিয়তা অনেকাংশে কমে যায়। ফলে মুসলিম লীগের জয়ের পথ অনেকটাই সুগম হয়।
উপসংহার : উপর্যুক্ত আলোচনা শেষে বলা যায় যে, পাকিস্তান সৃষ্টির পর মুসলিম লীগের অগণতান্ত্রিক মনোভাব, বিরোধী দলীয় নেতা ও কর্মীদের উপর বাংলা ভাষার উপর আক্রমণ প্রভৃতি কারণে ১৯৫৪ সালের তন এবং সর্বোপরি নির্বাচনে মুসলিম লীগ পরাজয় বরণ করে এবং যুক্তফ্রন্ট জয়ী হয়। বাঙালিরা যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার মধ্যে তাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক তথা ভাষাগত মুক্তির স্বপ্ন দেখে। তাই ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে বাঙালিরা যুক্তফ্রন্টকে তাদের অকুন্ঠ সমর্থনের মাধ্যমে জয়ী করে।
লেখা পড়ার জন্যে ভালো ওয়েবসাইট
🖤🖤