বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস,বৈশিষ্ট্য

বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস,বৈশিষ্ট্য,রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি


বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা 

প্রথমে এখানে কিছু সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হল। তারপর বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস, সংবিধান প্রণয়নের ধাপ, বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ, ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের বৈশিষ্ট্য এবং রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিসমূহ আলোচনা করা হয়েছে।

*সংবিধান কী?
দেশের শাসনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী নিয়মকানুনকে সংবিধান বলা হয়।
*বাংলাদেশের সংবিধান কীরূপ?
লিখিত সংবিধান ।
*কত সালে বাংলাদেশের সংবিধান প্রথম রচিত হয়েছে?
১৯৭২ সালে।
*খসড়া সংবিধান কখন সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছিল?
৪ নভেম্বর ১৯৭২।
*বাংলাদেশের আইনসভার নাম কী?
জাতীয় সংসদ ।
*বাংলাদেশের সংবিধাননের রাষ্ট্রীয় মূলনীতি কয়টি?
৪ টি।
*বাংলাদেশের সংবিধানের রাষ্ট্রীয় মূলনীতিগুলো কী কী?
জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।
*কে অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন?
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
*খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটির একমাত্র বিরোধী দলীয় সদস্য কে ছিলেন?
সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত।
*বাংলাদেশ সংবিধানে কতগুলো অনুচ্ছেদ আছে?
১৫৩ টি
*বাংলাদেশ সংবিধানে কতগুলো তফসিল রয়েছে?
৪ টি।

বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস আলোচনা কর
অথবা, বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ধাপগুলো সংক্ষেপে বর্ণনা কর ।

ভূমিকা : সংবিধান একটি রাষ্ট্রের মৌলিক দলিল, যার ভিত্তিতে কোনো রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে সেসব বিষয়ে যাবতীয় নিয়মকানুন লিপিবদ্ধ থাকে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রণীত ১৯৭২ সালের সংবিধান সমগ্র জাতির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। পাকিস্তান যেখানে নয় বছর, ভারত তিন বছর সময় নেয়, সেখানে বাংলাদেশ মাত্র নয় মাসে (এপ্রিল ১৯৭২-ডিসেম্বর ১৯৭২) জাতিকে সংবিধান উপহার দিতে সক্ষম হয়।

বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের ইতিহাস : বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের একটি সুদীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। নিচে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন পদ্ধতি আলোচনা করা হলো

১। অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি : ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অস্থায়ী সংবিধান আদেশ জারি করেন। এ আদেশ অনুযায়ী সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা গঠন, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব পালন ইত্যাদি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই আদেশে গণপরিষদকে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দেয়া হয় নি। এ ক্ষমতা নির্বাহী বিভাগের উপর ন্যস্ত ছিল। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সংবিধান কার্যকর হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র দেশের সর্বোচ্চ আইন হিসেবে বলবৎ ছিল।

২। গণপরিষদ আদেশ জারি : ১৯৭২ সালের ২৩ মার্চ রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গণপরিষদ আদেশ জারি করা হয়। এ আদেশ বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের প্রথম পদক্ষেপ। গণপরিষদ আদেশে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে সাবেক পাকিস্তান জাতীয় পরিষদ ও পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্য (১৬৯ + ৩১০ = ৪৭৯ জন) নিয়ে গণপরিষদ গঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে শহিদ, কয়েকজনের স্বাভাবিক মৃত্যু, দালালি, দলত্যাগ ইত্যাদি কারণে ৪৯ জন সদস্য বাদ পড়লে ৪০৪ জন সদস্য নিয়ে গণপরিষদ যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশের একটি স্থায়ী পূর্ণাঙ্গ সংবিধান প্রণয়নের দায়িত্ব এই গণপরিষদের উপর ন্যস্ত করা হয়।

৩। চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন ও বিল আকারে উপস্থাপন : ১৯৭২ সালের ১১ অক্টোবর খসড়া সংবিধান প্রণয়ন কমিটি সংবিধানের চূড়ান্ত খসড়া প্রণয়ন করেন। এর পূর্বে চূড়ান্ত খসড়াটি ৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের বৈঠকে উত্থাপিত ও আলোচিত হয়। চূড়ান্ত খসড়াটি কমিটির সভাপতি এবং দেশের তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন সংবিধান বিলের আকারে গণপরিষদে উত্থাপন করেন।

৪। সংবিধান বিল সম্পর্কে আলোচনা : ১৩ অক্টোবর ১৯৭২ গণপরিষদ নিজস্ব কার্যপ্রণালির বিধিমালা গ্রহণ করেন। ১৮ অক্টোবর থেকে গণপরিষদে সংবিধান বিল সম্পর্কে সাধারণ আলোচনা শুরু হয় এবং ৩০ অক্টোবর তা সমাপ্ত হয়। ২০ অক্টোবর কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মনি সিং ড. কামাল হোসেনের সাথে সাক্ষাৎ করে সংবিধানের বিষয়ে তার পার্টির সুপারিশ উপস্থাপন করেন। ৩১ অক্টোবর থেকে গণপরিষদে খসড়া সংবিধানের ধারাওয়ারী আলোচনা শুরু হয়। ৩ নভেম্বর পর্যন্ত তা চলে । আলোচনাকালে আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্যগণ কর্তৃক আনীত কতিপয় সংশোধনী গ্রহণ করা হয়।

৫। গণপরিষদে সংবিধান বিল পাস: ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে সংবিধান বিল পাস হয়। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭২ স্পিকার, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ ও গণপরিষদ সদস্যগণ সংবিধানের বাংলা ও ইংরেজি অনুলিপিতে স্বাক্ষর দান করেন। তবে একমাত্র বিরোধী দলীয় সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংবিধান বইতে স্বাক্ষরদানে বিরত থাকেন।

৬। সংবিধান কার্যকর : ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস থেকে সংবিধান কার্যকর করা হয়। এরপর গণপরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়। গণপরিষদের স্পিকার শাহ আব্দুল হামিদ মৃত্যুবরণ করায় (১২ অক্টোবর ১৯৭২) ইতোমধ্যে মোহাম্মদ উল্লাহকে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত করা হয়। বাংলাদেশ সংবিধান ১টি প্রস্তাবনা, ১১টি ভাগ, ৪টি তফশিল ও ১৫৩টি অনুচ্ছেদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে।

উপসংহার : সুদীর্ঘ ৯ মাসের প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে ১৯৭৩ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশের সংবিধান কার্যকর করা হয়। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত নিখুঁত সংবিধান প্রণয়ন পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল। বাংলাদেশের সংবিধানে সন্নিবেশিত ধারা-উপধারাতে যথেষ্ট অভিজ্ঞতার ছাপ বিদ্যমান। তাই বাংলাদেশের সংবিধানকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সংবিধান বলা হয়।

বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ সংক্ষেপে আলোচনা কর । অথবা, সংক্ষেপে ১৯৭২ সালের মূল সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর ।

ভূমিকা : সংবিধান একটি রাষ্ট্রের মৌলিক দলিল, যার ভিত্তিতে কোনো রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে সেসব বিষয়ে যাবতীয় নিয়মকানুন লিপিবদ্ধ থাকে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রণীত ১৯৭২ সালের সংবিধান সমগ্র জাতির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। পাকিস্তান যেখানে নয় বছর এবং ভারত তিন বছর সময় নেয়, সেখানে বাংলাদেশ মাত্র নয় মাসে (এপ্রিল ১৯৭২-ডিসেম্বর ১৯৭২) জাতিকে সংবিধান উপহার দিতে সক্ষম হয়।

বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ : ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর কার্যকরকৃত বাংলাদেশ সংবিধানের কতকগুলো চমকপ্রদ বৈশিষ্ট্য একে অনন্য স্বকীয়তায় সমাসীন করেছে। নিচে বাংলাদেশের সংবিধানের বৈশিষ্ট্যসমূহ আলোচনা করা হলো

১। লিখিত দলিল : বাংলাদেশের সংবিধান একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ সালে গৃহীত সংবিধানে ১টি প্রস্তাবনা, ১১টি ভাগ, ১৫৩টি অনুচ্ছেদ এবং ৪টি তফসিল সন্নিবেশিত ছিল। তবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে ৩টি নতুন তফশিল সন্নিবেশ করা হয়, যার ফলে বর্তমানে বাংলাদেশ সংবিধানের তফশিল সংখ্যা ৭ টি।

২। দুষ্পরিবর্তনীয় : ১৯৭২ সালে গৃহীত বাংলাদেশের সংবিধান দুষ্পরিবর্তনীয়। কারণ, এর কোনো নিয়ম পরিবর্তন বা সংশোধন বা সংযোজন করতে জাতীয় সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতির প্রয়োজন হয়। সংবিধানের দশম ভাগে সংশোধন পদ্ধতি সম্পর্কে উল্লিখিত আছে।

৩। সর্বোচ্চ আইন : বাংলাদেশের সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। কারণ বাংলাদেশের সংবিধানের নাথে দেশের প্রচলিত কোনো আইনের সংঘাত সৃষ্টি হলে সেক্ষেত্রে সংবিধান প্রাধান্য পাবে। অর্থাৎ, যদি কোনো আইন সংবিধানের সাথে সামঞ্জস্যহীন হয়, তাহলে ঐ আইনের যতখানি অসামঞ্জস্যপূর্ণ, ততখানি বাতিল হয়ে যাবে ।

৪। প্রজাতন্ত্র : বাংলাদেশ সংবিধানের প্রথম ভাগ ছিল নতুন প্রজাতন্ত্রের সুনির্দিষ্ট এবং আনুষ্ঠানিক বহিঃপ্রকাশ। এটি বাংলাদেশকে একটি একক, স্বাধীন ও সার্বভৌম প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করে। এতে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানা, রাষ্ট্রভাষা, জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, জাতীয় প্রতীক, জাতীয় ফুল এবং জাতীয় স্বাতন্ত্র্যকে সংজ্ঞায়িত করা হয়।

৫। প্রস্তাবনা : জনগণের অভিন্ন অভিব্যক্তি ও রাষ্ট্র পরিচালনার আদর্শস্বরূপ জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার সর্বোচ্চ আদর্শকে সুনিশ্চিত করে, যা আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তির জন্য যুদ্ধে আত্মনিয়োগ ও প্রাণ উৎসর্গ করতে, উদ্বুদ্ধ করে। এসব আদর্শই সংবিধানের মূলনীতি বলে উল্লেখ করা হয়।

উপসংহার : বাংলাদেশ সংবিধানের উল্লিখিত বৈশিষ্ট্য ছাড়াও আরো নানাবিধ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যেমন- সংশোধনী, মালিকানার নীতি, এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র, এককক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা, গণতন্ত্রের মাধ্যমে সমাজতন্ত্র, ন্যায়পাল পদ সৃষ্টি, সর্বজনীন ভোটাধিকার ইত্যাদি। এসব অনন্য বৈশিষ্ট্যের দরুনই বাংলাদেশের সংবিধানকে পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান বলা হয়।

বাংলাদেশ সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার প্রধান মূলনীতিসমূহ আলোচনা কর।

ভূমিকা : সংবিধান একটি রাষ্ট্রের মৌলিক দলিল, যার ভিত্তিতে কোনো রাষ্ট্র কীভাবে পরিচালিত হবে সে-সব বিষয়ে যাবতীয় নিয়মকানুন লিপিবদ্ধ থাকে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রণীত ১৯৭২ সালের সংবিধান সমগ্র জাতির জন্য আশীর্বাদস্বরূপ। পাকিস্তান যেখানে নয় বছর, ভারত তিন বছর সময় নেয়, সেখানে বাংলাদেশ মাত্র নয় মাসে (এপ্রিল ১৯৭২-ডিসেম্বর ১৯৭২) জাতিকে সংবিধান উপহার দিতে সক্ষম হয়।

বাংলাদেশ সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার প্রধান মূলনীতিসমূহ : বাংলাদেশ সংবিধানের দ্বিতীয়ভাগে 'রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি' শিরোনামে ৮ থেকে ২৫নং অনুচ্ছেদ পর্যন্ত কতকগুলো রাষ্ট্রীয় মূলনীতি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে । নিচে এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো

১। জাতীয়তাবাদ : বাংলাদেশের সংবিধানের ৯ম অনুচ্ছেদে বলা হয়, “ভাষাগত ও সংস্কৃতিগত একক সত্তাবিশিষ্ট যে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ ও সংকল্পবদ্ধ সংগ্রাম করে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অর্জন করেছিল, সেই বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতি হবে বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভিত্তি। বাঙালি জাতির ঐক্য ও সংহতির মূলে রয়েছে ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি।

২। সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজ : বাংলাদেশের সংবিধানে রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি হিসেবে সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। সংবিধানের ৯ম অনুচ্ছেদে বলা হয়, “মানুষের উপর মানুষের শোষণ হতে মুক্ত ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজ লাভ নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে।”

৩। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার : সংবিধানে গণতন্ত্রকে রাষ্ট্রের অন্যতম মূল চালিকাশক্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সংবিধানের ১১নং অনুচ্ছেদে বলা হয়, “প্রজাতন্ত্র হবে একটি গণতন্ত্র, যেখানে মৌলিক মানবাধিকার ও স্বাধীনতার নিশ্চয়তা থাকবে। মানবসত্তার মর্যাদা ও মূল্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ নিশ্চিত হবে এবং প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে।

৪। ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা : সংবিধানের ১২নং অনুচ্ছেদে ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। সংবিধানে বলা হয়েছে যে, ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বাস্তবায়নের জন্য সর্বপ্রকার সাম্প্রদায়িকতার অবসান করা হবে। এ ছাড়াও রাষ্ট্রকর্তৃক কোনো ধর্মকে রাজনৈতিক মর্যাদাদান করা হবে না। সর্বোপরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ধর্মীয় অপব্যবহার এবং কোনো বিশেষ ধর্ম পালনকারী ব্যক্তির প্রতি বৈষম্য বা তার উপর নিপীড়ন বন্ধ করা হবে।

উপসংহার : বাংলাদেশে সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিসমূহের মধ্যে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা এই চারটিই প্রধান। এই চারটি মূলনীতির মাধ্যমেই রাষ্ট্র পরিচালিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার এসব মূলনীতি বাংলাদেশের পরিবেশ ও পরিস্থিতির সাথে অধিক যুক্তিযুক্ত ও যুগোপযোগী।
Next Post Previous Post
1 Comments
  • IELTS Preparation AtoZ
    IELTS Preparation AtoZ September 3, 2022 at 7:16 PM

    Good article for student

Add Comment
comment url