Mollusca পর্বের শ্রেণিবিন্যাস Phylum Mollusca

Mollusca পর্বের শ্রেণিবিন্যাস Classification of Phylum Mollusca

Mollusca পর্বের শ্রেণিবিন্যাস (Classification of Phylum Mollusca)

প্রকৃত সিলোমযুক্ত অমেরুদণ্ডী প্রাণী পর্বসমূহের মধ্যে Mollusca অন্যতম। অমেরুদণ্ডী প্রাণী পর্বসমূহের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্ব হিসাবে Mollusca-কে বিবেচনা করা হয়। পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি বাস্তুতান্ত্রিক আবাসে এই পর্বের প্রাণীরা বসবাস করে, পর্বটির নাম করণ ল্যাটিন শব্দ Mollis থেকে করা হয়েছে, যার বাংলা অভিধানিক অর্থ নরম।
বিভিন্ন বিজ্ঞানী বিভিন্নভাবে Mollusca পর্বের শ্রেণিবিন্যাস করেছেন। এদের মধ্যে Mortan & Yonge (1964) প্রণীত Classification and Structure of the Mollusca নামক গ্রন্থে বর্ণিত শ্রেণীবিন্যাসটি বেশি গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। শ্রেণিবিন্যাসটি নিম্নরূপ

Mortan & Yonge (1964) অনুযায়ী Mollusca পর্বটিকে ৬টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়েছে। এরা হলো

শ্ৰেণী-১ : Monoplacophora
1. দেহ দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম এবং অভ্যন্তরীণভাবে খণ্ডিত।
2. দেহে ৬ জোড়া নেফ্রিডিয়া উপস্থিত। 
3. এক লিঙ্গ প্রাণী।
উদাহরণ: Neopilina

শ্রেণী-২: Amphineura (Gr. amphion both sides)
1. ডিম্বাকার বা লম্বা নলাকার দেহ দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম।
2. মস্তক অস্পষ্ট, চোখ ও শুঙ্গবিহীন।
3. নিষেক বাহ্যিক এবং বর্ধন পরোক্ষ।

এই শ্রেণীটিতে ২টি উপশ্রেণি বিদ্যমান। এরা হল:

উপশ্রেণী-১ : Polyplacophora

১. দ্বিপার্শ্বীয় প্রতিসম দেহ উপবৃত্তাকার এবং অঙ্কীয় পৃষ্ঠীয়ভাবে চ্যাপ্টা।
২. দেহের পৃষ্ঠ ভাগে ৮টি খণ্ডকযুক্ত খোলক বিদ্যমান।
৩. পদ মাংসল, বৃহৎ এবং চ্যাপ্টা।

এই উপশ্রেণীটিকে ২টি বর্গে ভাগ করা হয়। এরা হলো

বর্গ-১ : Lepidopleurida
১. খোলকের কপাটিকাগুলো প্লেট বিহীন। 
২. পরিপাক নালী সরল প্রকৃতির।
৩. পায়ুর কাছাকাছি ফুলকা অবস্থিত।
উদাহরণ: Hanleya.

বর্গ-২ : Chitonida.
১. খোলকের কপাটিকাগুলো প্লেট যুক্ত।
২. পরিপাক ও রেচনতন্ত্র সুগঠিত।
৩. দেহের অধিকাংশ স্থান জুড়ে ফুলকা অবস্থিত।
 উদাহরণ: Chiton.

উপশ্রেণী-2 : Aplacophora
1. খোলকবিহীন লম্বা কীট আকৃতির প্রাণী।
2. দেহত্বক পুরু এবং চুনজাতীয় স্পিকিউল সমন্বিত।
3. একলিঙ্গ বা উভলিঙ্গ প্রাণী।

উপশ্রেণীটিকে ২টি বর্গে ভাগ করা হয়। এরা হল-

বর্গ-1: Neomeniomorpha.
১. দেহের অঙ্কীয় মধ্যদেশে অনুদৈর্ঘ্য খাঁজ বিদ্যমান।
২. পদ ক্ষয়িষ্ণু।
৩. প্রাণী।
উদাহরণ: Neomenia.

বর্গ-২: Chactodermomorpha.
১. দেহের অভীয় মধ্যদেশে খাজবিহীন। 
২. পদ সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত।
৩. একলিঙ্গ প্রাণী।
উদাহরণ: Chaetoderma.

শ্রেণী-৩: Gastropoda (Gr. gastros stomach, podos foot)
1. অপ্রতিসম দেহটি অখণ্ডায়িত।
2. দেহে খোলক উপস্থিত বা অনুপস্থিত।
3. একলিঙ্গ বা উভলিঙ্গ প্রাণী।

এই শ্রেণীটিকে ২টি উপশ্রেণীতে ভাগ করা হয়। এরা হল:

উপশ্রেণী-১: Prosobranchia
1. খোলক Conical আকৃতির ও অপারকুলাম যুক্ত।
2. মস্তকে ১ জোড়া কর্ষিকা বিদ্যমান।
3. এক লিঙ্গ প্রাণী।

এই উপশ্রেণীটিকে ৪টি বর্গে ভাগ করা হয়। এরা হল:

বর্গ-1: Archaeogastropoda
১. সাইফন, প্রোবোসিস এবং সঙ্গম অঙ্গ বিহীন আদিম প্রকৃতির প্রাণী।
২. খোলক প্যাচানো অবস্থায় থাকে।
৩. পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে ফুলকা ক্ষয়িষ্ণু বা অনুপস্থিত থাকে।
উদাহরণ: Patella.

বর্গ-2: Neritacea.
১. দেহে ১টি মাত্র বাইপেক্ট্রিনেট ফুলকা বিদ্যমান।
২. ডান রেচন অঙ্গ জনন নালিকায় রূপান্তরিত হয়। 
৩. বাম রেচন অঙ্গ রেচনে সহায়তা করে।
উদাহরণ : Nerita.

বর্গ-৩: Mesogastropoda.
১. দেহে ১টি মাত্র মনোপেক্টিনেট ফুলকা বিদ্যমান। 
২. দেহে অপারকুলাম, সাইফন এবং অসফ্রাডিয়াম সুগঠিত।
৩. বর্ধন পরোক্ষ।
উদাহরণ : Pila.

বর্গ-8: Neogastropoda.
১. দেহে ১টি মাত্র মনোপেক্ট্রিনেট ফুলকা বিদ্যমান। 
২. খোলক ১টি সংক্ষিপ্ত বা লম্বা সাইফন বাহিকা যুক্ত।
৩. অসফ্রাডিয়াম বৃহদাকার।
উদাহরণ : Oliva.

উপশ্রেণী-২: Opisthobranchia.
১. খোলক অভ্যন্তরীণ এবং জল্লাত্ বা অনুপস্থিত।
২. ম্যান্টল গহ্বর পৃষ্ঠীয় দিকে মুক্ত হয়।
৩. ফুলকা দেহের পিছনের দিকে অবস্থান করে ।

এই উপশ্রেণীটিকে ৮টি বর্গে ভাগ করা হয়। এরা হল: 

বর্গ-1: Cephalaspidea.
১. খোলক বিদ্যমান এবং ম্যান্টেলে আবদ্ধ।
২. ১টি ভাঁজ যুক্ত ফুলকা বিদ্যমান
৩. মস্তকে কর্ষিকা বৰ্ম থাকে।
উদাহরণ: Bulla.

বর্গ-২ : Anaspidea.
১. খোলক ক্ষুদ্র ও অভ্যন্তরীণ।
২. ম্যান্টল গহ্বর দেহের ডানদিকে অবস্থিত।
৩. মস্তকে কর্ষিকা বর্ম থাকে না।
উদাহরণ : Aplysia.

বর্গ-৩: Thecosamata.
১. খোলক উপস্থিত এবং প্যাঁচানো।
২. ম্যান্টল গহ্বর বৃহদাকার। 
৩. মাংসল পদ পরিবর্তিত হয়ে প্যারাপোডিয়া গঠন করে।
উদাহরণ: Cavolina.

বর্গ-8 : Gymnosomata.
১. খোলক অনুপস্থিত। 
২. ম্যান্টল গহ্বর ক্ষয়প্রাপ্ত বা অনুপস্থিত
৩. অঙ্কীয় প্যারাপোডিয়াল পাখনা বিদ্যমান।
উদাহরণ: Cliona.

বর্গ-৫ : Notaspida.
১. খোলক উপস্থিত বা অনুপস্থিত।
২. ম্যান্টল গহ্বর অনুপস্থিত ।
৩. দেহের ডান দিকে ১টি মাত্র ফুলকা বিদ্যমান। 
উদাহরণ : Tylodina.

বর্গ-৬ : Acochlidiacea.
১. দেহ খোলকবিহীন বা নগ্ন।
২. মাংসল পদ অপেক্ষা ভিসেরাল পিণ্ড বড়।
৩. একলিঙ্গ বা উভলিঙ্গ প্রাণী।
উদাহরণ : : Acochlidium.

বর্গ-৭ : Sacoglossa.
১. খোলক উপস্থিত বা অনুপস্থিত।
২. গলবিল চোষণক্ষম।
৩. র‍্যাডুলা ও মৌখিক পিণ্ড বিদ্যমান।
উদাহরণ : Elysia.

বর্গ-৮ : Acoela.
১. ফুলকা ও ম্যান্টল গহ্বর অনুপস্থিত।
২. মূলদেহ দ্বি-পার্শ্বীয় প্রতিসম। 
৩. দেহে পায়ু ফুলকা বিদ্যমান।
উদাহরণ: Doris.

উপশ্রেণী-৩: Pulmonata.
1. এই মস্তকে ১–২ জোড়া কর্ষিকা ও ১ জোড়া চক্ষু বিদ্যমান।
2. খোলক ক্ষয়প্রাপ্ত বা অনুপস্থিত।
3. উভলিঙ্গ প্রাণী

এই উপশ্রেণীটিকে ২টি বর্গে ভাগ করা হয়। এরা হলো

বর্গ-1: Bassomatophora.
১. মস্তকে ১ জোড়া চক্ষু ও ১ জোড়া কর্ষিকা থাকে। 
২. কর্ষিকার গোড়ায় চক্ষু অবস্থান করে।
৩. কিছু প্রাণীতে গৌণ ফুলকা থাকে।
উদাহরণ: Lymnaea.

বৰ্গ-২ : Stylommatophora.
১. খোলক অভ্যন্তরীণ বা অনুপস্থিত।
২. মস্তক অঞ্চলে ২ জোড়া কর্ষিকা বিদ্যমান।
৩. স্ত্রী ও পুংজনন ছিদ্র সংযুক্ত।
উদাহরণ : Limax

শ্রণী-8: Scaphopoda (Gr.skaphi= trough boat + podes foot)
1. পদ কোদাল আকৃতির।
2.. চক্ষু, কর্ষিকা ও ফুলকা অনুপস্থিত। 
3. একলিঙ্গ প্রাণী।
উদাহরণ: Dentalium.

শ্ৰেণী-৫: Bivalvia (L. bi = two + valva = valve)
1. দেহে মস্তক, কর্ষিকা ও চক্ষু অনুপস্থিত।
2. ১ জোড়া ফুলকার সাহায্যে শ্বসন সম্পন্ন হয়। 
3. একলিঙ্গ প্রাণী এবং বর্ধন পরোক্ষ।

এই শ্রেণীটিকে ৩টি উপশ্রেণীতে ভাগ করা হয়। এরা হলো

 উপশ্রেণী-1 : Protobranchia.
১. দেহে ১ জোড়া আদিম প্রকৃতির ফুলকা বিদ্যমান।
২. পদের অঙ্কীয় ভাগ চ্যাপ্টা তল গঠন করে।
৩. খোলকের সাথে ২টি অ্যাডাক্টর পেশী যুক্ত থাকে।
উদাহরণ : Navicula.

উপশ্রেণী-২: Lamellibranchia.
১. পত্র সদৃশ বৃহদাকার ফুলকা বিদ্যমান 
২. ফুলকা পাতগুলো ভাঁজ হয়ে অবস্থান করে।
৩. ২টি সম আকৃতির অ্যাডাক্টর পেশী উপস্থিত।

এই উপশ্রেণীটিকে ৬টি বর্গে ভাগ করা হয়। এরা হল: 

বর্গ-1: Toxodonta.
১. ফুলকার সংখ্যা ১ জোড়া।
২. ফুলকা পাতগুলো আন্ত:ল্যামেলা দ্বারা যুক্ত নয়।
৩. খোলকের কপাটিকায় অসংখ্য সমআকৃতির দাঁত থাকে ৷
উদাহরণ : Arca.

বর্গ-২ : Anisomyaria.
১. ফুলকার সংখ্যা ১ জোড়া।
২. ফুলকা পাতগুলো আন্ত:ল্যামেলা দ্বারা যুক্ত।
৩. পদ ক্ষুদ্র বা অনুপস্থিত।
উদাহরণ : Mytilus, Pecten.

বর্গ-৩: Heterodonta.
১. প্রকৃত ফুলকা বিদ্যমান।
2. কপাটিকার কব্জায় অসমআকৃতির দাঁত বিদ্যমান। 
৩. ম্যান্টল প্রান্ত সংযুক্ত।
উদাহরণ: Cardium.

বর্গ-8: Schizodonta.
১. প্রকৃত ফুলকা বিদ্যমান।
২. কপাটিকার কব্জায় দাঁতের আকার ভিন্ন হয়।
৩. ২টি সমআকৃতির অ্যাডাক্টর পেশী বিদ্যমান। 
উদাহরণ : Unio.

বর্গ-৫: Adepedonta.
১. প্রকৃত ফুলকা বিদ্যমান।
২. খোলকের সংযোগ দুর্বল প্রকৃতির। 
৩. ম্যান্টল বড় ও লম্বা সাইফন গঠন করে। 
উদাহরণ : Ensis.

বর্গ-৬ : Anomalodesmata.
১. প্রকৃত ফুলকা বিদ্যমান।
২. ম্যান্টল প্রান্ত সংযুক্ত।
৩. মাংসল পদ ক্ষুদ্রাকৃতির।
উদাহরণ: Thracia

উপশ্রেণী-৩: Septibranchia.
১. ফুলকা অনুভূমিক ভাবে মাংসল পর্দায় রূপান্তরিত।
২. কপাটিকার কব্জায় দাঁত সংক্ষিপ্ত বা অনুপস্থিত।
৩. পদ লম্বা ও সরু।
উদাহরণ: Poromya.

শ্ৰেণী-৬ : Cephalopoda (Gr. kephale head + podos foot)
1. খোলক বাহ্যিক, অভ্যন্তরীণ বা অনুপস্থিত।
2. দেহে ফুলকার সংখ্যা ১-২ জোড়া।
3. একলিঙ্গ প্রাণী এবং বর্ধন প্রত্যক্ষ।

 এই শ্রেণীটিকে ৬টি উপশ্রেণীটিতে ভাগ করা হয়। এরা হলো 

উপশ্রেণী-১ : Nautiloidea.
১. খোলক বাহ্যিক এবং বহু প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট।
২. নস্তকে অসংখ্য চোষকবিহীন কর্ষিকা বিদ্যমান।
৩. পদের মূল অংশ খণ্ডিত হয়ে মুখছিদ্রকে বেষ্টন করে থাকে।
উদাহরণ: Nautilus.

উপশ্রেণী-২-Ammonoidea. 
১. বর্তমানে বিলুপ্ত।
২. খোলক বাহ্যিক ও প্যাচানো ছিল।
৩. খোলক সেণ্টা ও সূচার যুক্ত ছিল।
উদাহরণ : Ammonites.

উপশ্রেণী-৩ : Coleoidea.
১. খোলক অভ্যন্তরীণ, ক্ষয়প্রাপ্ত বা অনুপস্থিত।
২. মস্তকে অঞ্চলে ৮-১০টি চোষকযুক্ত বাহু থাকে।
৩. দেহে ১ জোড়া ফুলকা বিদ্যমান। 

এই উপশ্রেণীটিকে ৩টি বর্গে ভাগ করা হয়। এরা হল: 

বর্গ-১ : Decapoda.
১. দেহ প্রসারিত এবং পার্শ্বীয় পাখনা যুক্ত। 
২. খোলক অভ্যন্তরীণ ।
৩. ২টি লম্বা ও ৮টি খাটো বাহুযুক্ত।
উদাহরণ : Sepia, Loligo.

বর্গ-২ : Octopoda.
১. মূল দেহ থলি সদৃশ।
২. দেহে পার্শ্বীয় পাখনা অনুপস্থিত।
৩. ৮টি সমআকৃতির বাহু বিদ্যমান।
উদাহরণ: Octopus.

বর্গ-৩ : Vampyromorpha.
১. দেহ ৮টি বাহু বিদ্যমান। 
২. বাহুগুলো লম্বা ও সরু।
৩. বাহু ব্যতীত ২টি ক্ষুদ্র কর্ষিকা বিদ্যমান।
উদাহরণ : Vampyrotenthis.

Next Post Previous Post
1 Comments
  • Anonymous
    Anonymous May 19, 2022 at 8:39 AM

    👍👍👍😊

Add Comment
comment url